আকাশে অদ্ভুত ঘটনা (পর্ব-২)

১৯৬১ সালের এক রৌদ্রকরোজ্জ্বল সকাল। নীল আকাশের এখানে সেখানে হালকা সাদা মেঘ। এই চমৎকার সকালে আমেরিকার ওয়াইও স্টেটের আকাশে বিমান চালাচ্ছিল এক পাইলট । হঠাৎ সাদা মেঘের আড়াল থেকে বের হয়ে আসা বিমানটাকে দেখে হতভম্ব হয়ে গেল পাইলট। কাঠ আর ক্যাম্বিশের তৈরি একটা বাইপ্লেন। প্রথম মহাযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত বিমান এই ১৯৬১ সালে! বাইপ্লেনটাকে সোজা নিজের বিমানের দিকে আসতে দেখে সংঘর্ষ এড়াতে বিমানের নাক উপরে তুলে ফেলল আধুনিক পাইলট। সাঁ করে নীচ দিয়ে চলে যাওয়া বাইপ্লেনটা দেখবার জন্য পেছন ফিরে তাকাতেই দ্বিতীয়বার হতভম্ব হলো পাইলট। পরিষ্কার নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। বাইপ্লেনের কোন চিহ্নই নেই, যেন ওটা ছিলই না এখানে।
সাথে সাথে বিমান নিয়ে মাটিতে নেমে এসে সবাইকে ঘটনাটা জানাল পাইলট । সিভিল এরোনটিক বোর্ডও শুনল ঘটনাটা। কিন্তু সবাই হেসে উড়িয়ে দিল এবং ভুলে গেল । কিন্তু সেই পাইলট ভুলতে পারল না ঘটনাটা। বিভিন্ন ফ্লাইং ক্লাবে খোঁজ নিতে শুরু করল সে পঞ্চাশ বছরের পুরনো মডেলের একটা সচল বাইপ্লেন আছে কিনা।
অবশেষে খোঁজ পাওয়া গেল। কিন্তু প্লেনটি অচল। এক গ্রাম্য ডাক পিয়ন খবর দিল গ্রামের কাছেই একটা ফার্মে অনেক পুরনো একটা বাইপ্লেন আছে, কিন্তু সেটি চলে না।
একজন বন্ধু সহ ডাকপিয়ন নির্দেশিত ফার্মে পৌছে বিশাল এক রেন ট্রির নীচে পড়ে থাকা পুরনো একটা বাইপ্লেন দেখে চমকে উঠল পাইলট, হুবহু সেই প্লেন যেটাকে আকাশে দেখেছিল সে। কিন্তু তা কী করে সম্ভব? প্লেনের উপর পুরু ধুলোর আস্তরণ, আর প্লেনের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে ওটা এখানেই আছে।
বাইপ্লেনে একজোড়া গগলস, একটা সেকেলে হেলমেট এবং একটা ব্যাগ খুঁজে পেল পাইলট। ব্যাগ থেকে লগবুক বের করে সেটা পড়ে ভীষণ চমকে উঠল সে। ওতে লেখ:‘আশ্চর্য! ঝকঝকে রুপালি একটা প্লেন দেখলাম আকাশে। কিন্তু এত উন্নতমানের প্লেন কে তৈরি করল? চেহারা দেখ মনে হচ্ছে আরও পঞ্চাশ বছর পর তৈরি হওয়া উচিত ছিল ওটার। আরও আশ্চর্য, বোধহয় আমাকে ধাক্কা দিতে ছুটে এসেছিল ওই অদ্ভুত প্লেনটা, কিন্তু শেষ মুহুর্তে মত পরিবর্তন করে ওপর দিয়ে উড়ে গেল’। লেখার নীচে ঘটনার সন উল্লেখ করা আছে। ১৯১১ সালের একটা তারিখ!
কী ঘটেছিল আসলে সেই রৌদ্রকরোজ্জ্বল সকালে? যখন মুখোমুখি হয় প্রাচীন ও আধুনিক বিমান দুটি? এই ঘটনা বিশ্বাস করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলেন, এরকম হওয়া সম্ভব, দুটি ঘটনা হতে পারে। প্রথমত, বর্তমান থেকে (১৯৬১ সাল) অতীতে চলে গিয়েছিল আধুনিক বিমানের পাইলট, ১৯১১ সালের সেই রৌদ্রকরোজ্জ্বল সকালে, সেখানে সাক্ষাৎ হয় প্রাচীন বিমানটির সাথে। দ্বিতীয়ত, অতীত (১৯১১ সাল) থেকে বর্তমান (১৯৬১ সাল) চলে এসেছিল প্রাচীন বিমানের পাইলট এবং আধুনিক বিমানের মুখোমুখি হয়।
কিন্তু সময় পরিভ্রমণ অসম্ভব এবং কাল্পনিক একটি বিষয় বলে কোন কোন বিজ্ঞানী মনে করেন। আর কোন রকম যন্ত্র ব্যতীত যেমন টাইম মেশিন, কীভাবে অতীত এবং ভবিষ্যৎ মুখোমুখি হলো সেটিও রহস্যময় বিষয়। যার উত্তর আজও মেলেনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন