
মৃত্যুদণ্ড বিভিন্ন দেশে ভয়ঙ্কর সব অপরাধের শাস্তিস্বরুপ দেয়া হয়। দেশে
দেশে এর পদ্ধতি ও ইতিহাস ভিন্ন। পৃথিবীর ৫৮ টি দেশে এখনও মৃত্যুদণ্ড দেয়া
হয় অথচ ৯৭ টি দেশ থেকে এটি বিলুপ্তপ্রায়। মৃত্যুদন্ডের ইতিহাস বহু
পুরানো। একসময় সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে, পাথর মেরে, ক্রুশবিদ্ধ করে, এমনকি
হাতির পায়ের নিচে পিষ্ট করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতো।
প্রাচীন চীনে দুই ধরনের মৃত্যুদণ্ডের চল ছিলো। এক, রড দিয়ে খুচিয়ে মারা;
দুই, হাতের শিরা কেটে ফেলা। ৯০০ শতাব্দীতে কেটে কেটে মানুষকে মৃত্যুদন্ড
দেয়া হত।

আস্তে আস্তে মৃত্যুদণ্ড একটু একটু করে কাল ক্রমে সহজ হয়ে আসে। ফাসিতে
ঝোলানো, গলাকাটা বা গিলোটিনের মতো পদ্ধতিগুলো আসে। আস্তে আস্তে এসব আরও
আধুনিক রুপ পায়। যেমন, ফাসির দড়িতে ঝুলিয়ে আগে পায়ের নীচের টুল সরিয়ে
ফেলা হত আর এখন অনেক উপর থেকে ফাসিতে ঝুলিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় তাতে সাথে
সাথে আসামীর মৃত্যু হয়।
১।ফাসি(এশিয়া মহাদেশ,লাইবেরিয়া ও ওয়াশিংটন)
২।গলা কেটে ফেলা(সৌদি আরব ,কাতার)
৩।গ্যাস চেম্বার (ক্যালিফোর্নিয়া ,মিসৌরী ও আ্যারিজোনা )
৪।বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে(গুয়েতমালা,থাই ল্যান্ড ,চিন ,ভিয়েতনাম ও আমেরিকা)
৫।ফায়ারিং স্কোয়াড(চীন ,উত্তর কোরিয়া,ইন্দোনেশিয়া,কিউবা,ভিয়েতনাম)
৬।ইলেকট্রিক চেয়ার( আমেরিকা,চীন)



বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগে: আবদ্ধ ঘরের মতো যাতে একটি চেয়ার থাকে ও একটি
সিলিন্ডার থাকে, যেখানে সায়ানাইডের বড়ি থাকে, নীচে একটি পাত্রে সালফিউরিক
এসিড থাকে। এবার চেয়ারে বসিয়ে আসামীর হাত পা বেঁধে দেয়া হয়। বুকে
ইসিজি মনিটর লাগানো থাকে যা বাহির থেকে দেখা যায়। এবার বন্ধ দরজার ওপাশ
থেকে তিনটি বিস্ফোরন ঘটানো হয়। এতে সিলিন্ডারের সায়ানাইড সালফিউরিক এসিডে
পড়ে। মুহুর্তেই বিষাক্ত গ্যাস তৈরী হয়, যা মানুষকে কিছুক্ষনের মধ্যে
অচেতন করে ফেলে। কিছুক্ষন পরে খিঁচুনি শুরু হয় এবং এক যন্ত্রনাদায়ক
মৃত্যু ঘটে। আসামীর মৃত্যু নিশ্চিত হবার পর সেই চেম্বারে এমোনিয়া গ্যাস
পাম্প করা হয় ও একজোস্ট দিয়ে বিষাক্ত গ্যাস বের করে দেয়া হয়। প্রায় ৩০
মিনিট পর সেই চেম্বার খুলে মৃত দেহ বের করা হয়।
ফায়ারিং
স্কোয়াড: আসামীকে একটি ঘরের মধ্যে একটি চেয়ারে বসানো হয় বা একটি
পাটাতনে দাঁড় করানো হয়। হাত পা মুখ বাঁধা অবস্হায় থাকে। তার থেকে ২০ ফুট
দূরে একটা দেয়াল থাকে যাতে ফাকা জায়গা করা থাকে। এখান থেকেই গুলি করা
হয়। পরপর পাঁচ বার গুলি করা হয়। আসামীর মুখ এ সময় কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা
থাকে ও সাদা কাপড় দিয়ে আসামীর হার্ট চিহ্নিত করে দেয়া হয়। এটি একটি
পুরানো পদ্ধতি, আমেরিকাতে এই পদ্ধতির ব্যবহার আছে। সামরিক বাহিনীতে এই
নিয়মে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার রেওয়াজ অনেক আগে থেকেই চলে আসছে।
নির্দেশকারীর নির্দেশ পাওয়া মাত্র সবাই চেয়ারে আটকানো অথবা দাঁড় করানো মানুষটির হৃৎপিণ্ড বরাবর গুলি ছোড়েন। এতে তার হৃৎপিণ্ড এবং হৃৎপিণ্ডের আশে পাশের অঙ্গ যেমন: ফুসফুস, যকৃত, অম্লাশয় মুহূর্তে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। অসম্ভব কষ্ট পেয়ে মানুষটি মৃত্যু হয়। দৃশ্যত সাথে সাথেই নিস্তেজ হয়ে পড়তে দেখলেও প্রাণবায়ু বের হতে আরও সময় নেয়। কেননা তখনও ব্রেন সচল থাকে এবং মানুষটিকে বাঁচাতে চেষ্টা করে। এই সময়ের মাঝে তার পিপাসার সাথে সাথে ভয়ানক মৃত্যু কষ্ট অনুভূত হয়। কেননা এটা এক প্রকার আঘাতের মাধ্যমে মৃত্যু।
এখানে উল্লেখ্য, পাঁচটি রাইফেলের চারটিতে তাজা গুলি একটিতে ফাঁকা গুলি থাকে। অর্থাৎ নিহত ব্যক্তি চারটি গুলির আঘাতে মারা যায়। অন্যদিকে পাঁচজন শুটারের মাঝে একজন শুটার তার হত্যাকারী নয়। কে হত্যাকারী নয় তা নির্ণয় করাও সম্ভব নয়। ফলে সবাই দাবী করতে পারে নিহত ব্যক্তি অন্তত তার গুলিতে মারা যায়নি।
নির্দেশকারীর নির্দেশ পাওয়া মাত্র সবাই চেয়ারে আটকানো অথবা দাঁড় করানো মানুষটির হৃৎপিণ্ড বরাবর গুলি ছোড়েন। এতে তার হৃৎপিণ্ড এবং হৃৎপিণ্ডের আশে পাশের অঙ্গ যেমন: ফুসফুস, যকৃত, অম্লাশয় মুহূর্তে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। অসম্ভব কষ্ট পেয়ে মানুষটি মৃত্যু হয়। দৃশ্যত সাথে সাথেই নিস্তেজ হয়ে পড়তে দেখলেও প্রাণবায়ু বের হতে আরও সময় নেয়। কেননা তখনও ব্রেন সচল থাকে এবং মানুষটিকে বাঁচাতে চেষ্টা করে। এই সময়ের মাঝে তার পিপাসার সাথে সাথে ভয়ানক মৃত্যু কষ্ট অনুভূত হয়। কেননা এটা এক প্রকার আঘাতের মাধ্যমে মৃত্যু।
এখানে উল্লেখ্য, পাঁচটি রাইফেলের চারটিতে তাজা গুলি একটিতে ফাঁকা গুলি থাকে। অর্থাৎ নিহত ব্যক্তি চারটি গুলির আঘাতে মারা যায়। অন্যদিকে পাঁচজন শুটারের মাঝে একজন শুটার তার হত্যাকারী নয়। কে হত্যাকারী নয় তা নির্ণয় করাও সম্ভব নয়। ফলে সবাই দাবী করতে পারে নিহত ব্যক্তি অন্তত তার গুলিতে মারা যায়নি।
বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে: আসামীকে এক্ষেত্রে একটি রুমে আনা হয় ও
একটি বিশেষ বেডে শোয়ানো হয়। ইসিজি লীড লাগিয়ে মনিটরের সাথে সংযোগ দেয়া
হয়। দুই হাতে ক্যানোলা করে নরমাল স্যালাইন দেয়া হয়। থায়ো পেন্টাল
সোডিয়াম দিয়ে প্রথমে আসামীকে অচেতন করা হয়। এরপর সারা দেহ অবশ করার জন্য
প্যারালিজিং ড্রাগ প্যানকিউরিয়াম দেয়া হয়। তারপর অবশেষে হার্ট বন্ধ
করার জন্য দেয়া হয় পটাশিয়াম ক্লোরাইড ইনজেকশন। মিটরে ইসিজি দেখে মৃত্যু
নিশ্চিত করা হয়।
এখন অবশ্য বিভিন্ন দেশে মৃত্যুদন্ড নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। কারন এতে যদি ভুল করে কোন নিরিহ ব্যাক্তির মৃত্যু হয় তবে ফেরানোর কোন উপায় থাকেনা। একে আসলে বিচারের অবমাননা বলা হয়। এক জরীপে জানা যায়, ১৯৯২ থেকে২০০৪ পর্যন্ত ৩৯ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে।
এখন অবশ্য বিভিন্ন দেশে মৃত্যুদন্ড নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। কারন এতে যদি ভুল করে কোন নিরিহ ব্যাক্তির মৃত্যু হয় তবে ফেরানোর কোন উপায় থাকেনা। একে আসলে বিচারের অবমাননা বলা হয়। এক জরীপে জানা যায়, ১৯৯২ থেকে২০০৪ পর্যন্ত ৩৯ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন